লিঙ্গ সমস্যা

একবার সরকারের নীতি নির্ধারকদের একটি দল জটিল সমস্যায় পড়লেন। সমস্যাটা লিঙ্গ নির্ধারন সংক্রান্ত।
তো তারা গেলেন খালেদা জিয়ার কাছে। ম্যাডাম, কাঁঠাল কোন লিঙ্গ? ম্যাডাম বললেন, এটা নির্ধারন করা কোনো সমস্যা না। আমি আজকেই বাংলা একাডেমীর ডিজিকে বলে দিচ্ছি। তিনি জানিয়ে দিবেন।
কিন্তু দুইদিন গেল, ডিজি জানালেন না। তখন তারা গেল এরশাদের কাছে। এরশাদের ঝটপট জবাব-আরে কাঁঠাল হল পুং লিঙ্গ। কারণ কাঁঠালের বিচি আছে।
এরপর পত্রিকার খবর বের হল-পুলিশ একদল ছাত্রকে ডান্ডা দিয়ে বেধড়ক পেটাচ্ছে।
আচ্ছা, পুলিশ কোন লিঙ্গ? জানতে চাওয়া হল প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার কাছে। খালেদা বললেন, এটা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে খোঁজ নিতে হবে। সেই খোঁজ আর আসে না দেখে এরশাদের কাছে জানতে চাওয়া হয়। তিনি বললেন যেহেতু পুলিশের ডান্ডা আছে তাই পুলিশ পুংলিঙ্গ।

এরপর প্রশ্ন উঠে আইন কোন লিঙ্গ। এবারও যথারীতি খালেদা জিয়া ফেলটুস। বলতে পারলেন না। অগত্যা আবার কাবিল এরশাদের কাছে জিজ্ঞাসা। তিনি ভেবেচিন্তে বললেন, আইনের ফাঁক আছে, তাই আইন স্ত্রী লিঙ্গ।

দুয়ারে এসেছে লোডশেডিং – মোম-হারিকেন জ্বালো আরে দূর!

আবার লোডশেডিং শুরু হয়েছে। অথচ গ্রীষ্মকাল আসতে এখনো অনেক দিন বাকি। এরই মধ্যে সংবাদপত্রে বড় বড় হেডিং—গ্রীষ্মকাল আসার আগেই ভয়াবহ লোডশেডিং। মনে হচ্ছে লোডশেডিং গ্রীষ্ম-বর্ষা বোঝে না। লোডশেডিংকে সবাই ভালোবেসে বলে ‘কারেন্ট যাওয়া’। আর এই কারেন্ট যাওয়াটা বাংলাদেশের ব্যাটম্যানদের মতো না, যে ক্রিজে গিয়েই কিছুক্ষণের মধ্যে আউট হয়ে ফিরে আসবে। কারেন্ট একবার গিয়ে কমপক্ষে এক ঘণ্টা না থেকেই চলে এসেছে এমন ঘটনা ইতিহাসে বিরল। সুন্দরবনের বাঘের মতো এই ঘটনাও বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে। লোডশেডিংয়ের কারণে অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছে যে, অনেকে সন্ধ্যা হলেই ঘরের বৈদ্যুতিক বাতি নিভিয়ে মোমবাতি জ্বালিয়ে বসে থাকে। তবে আমাদের সরকার এ ব্যাপারে অত্যন্ত সচেতন। কোনো এলাকায় কখন লোডশেডিং হবে, সে সময়সূচি তারা একটি ওয়েবসাইটে দিয়ে রেখেছে। যাতে আগে থেকেই সবাই প্রস্তুত হয়ে থাকতে পারে। কিন্তু ঘন ঘন লোডশেডিংয়ের কারণে সেই রুটিনটাই কেউ দেখতে পারে না। এই দুঃখের কথা কাউকে বলা যায়? লোডশেডিংয়ের কারণে আমাদের দুঃখের কোনো শেষ নেই। আর একপক্ষের দুঃখে অন্য পক্ষ দাঁত কেলিয়ে হাসবে এটাই জগতের কঠিন সত্য। সে জন্যই লোডশেডিংয়ের সঙ্গে সঙ্গে মোমবাতি-হারিকেন বিক্রেতার মুখের হাসিও চক্রবৃদ্ধি হারে বাড়ছে। বড়ই আফসোস। তবে এই মোমবাতি-হারিকেন ছাড়া আমাদের কোনো গতি নেই। কারণ গ্রীষ্মকাল এলে লোডশেডিং আরও বাড়বে। অতএব এখনই মোমবাতি সংগ্রহ করা শুরু করুন। ডাকটিকিটফিকিট না জমিয়ে মোমবাতি জমান। লোডশেডিংয়ে ডাকটিকিট কোনোই কাজে আসবে না, কাজে আসবে এই মোমবাতি। তাই, আপনাদের যার যা কিছু আছে, তাই নিয়ে প্রস্তুত থাকুন। মনে রাখবেন. কারেন্ট যখন যাচ্ছে, কারেন্ট আরও যাবে। এ দেশের মোমবাতি ব্যবসায়ীদের ধনী করে ছাড়বে ইনশাল্লাহ…। (আরও কিছু জ্বালাময়ী বক্তব্য লেখার ইচ্ছা ছিল, কিন্তু উনি চলে গেছেন, মানে কারেন্ট চলে গেছে। লোডশেডিং। দেশের হবেটা কী? শান্তিমতো একটা বক্তব্য দেব, তারও উপায় নেই। ধ্যাত্! ভালোই লাগে না!)  সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, মার্চ ১৫, ২০১০